শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

যে ভুলে পতন হলো ইমরান খানের

 

তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান ২০১৮ সালে যখন পাকিস্তানের ক্ষমতায় বসেছিলেন, তখন সবই তার পক্ষে ছিল বলে মনে হয়েছিল। মাত্র সাড়ে তিন বছরের ব্যবধানে এসে কী এমন ঘটল- অনেকটা হঠাৎ করেই ক্ষমতা ছাড়তে হলো সাবেক জনপ্রিয় এ ক্রিকেট তারকাকে। জাতীয় পরিষদের অনাস্থা ভোটে হেরে গিয়ে ক্ষমতা ছাড়তে হলো তাকে। এরই কয়েকটি সম্ভাব্য কারণ খুঁেজ পেয়েছেন বিবিসির পাকিস্তান প্রতিনিধি সেকেন্দার কারমানি। তারই সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো।

ক্ষমতায় আসার পর ইমরান খান নতুন পাকিস্তান গড়বেন বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। কথিত আছে, পাকিস্তানের প্রভাবশালী সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার আনুকূল্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন এ সাবেক গতি তারকা। পিটিআইয়ের শাসনামলে পাকিস্তানের ছায়া নিয়ন্ত্রণ ছিল সেনাবাহিনীর হাতে। এ কারণে, ইমরানবৈরী তার সরকারকে ‘হাইব্রিড শাসনামল’ বলে কটু কথা ছড়িয়েছে।

ক্ষমতায় আসার পর ইমরান গর্বের সঙ্গে ঘোষণা করেছিলেন, নীতিগত সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে তিনি ও সেনাবাহিনী একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। ক্ষমতা মেয়াদের শেষদিকে এসে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সেই সম্পর্কে চিড় ধরেছে বলেই মনে হচ্ছে। পিটিআইয়ের বিদ্রোহী নেতারাই এসব কথা বিবিসির কাছে স্বীকার করেছেন। দেশটির সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে একজন অনভিজ্ঞ ও অযোগ্য রাজনৈতিক নবাগতকে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন ইমরান খান। তার শাসনামলে পাকিস্তানে জীবনযাত্রার ব্যয় ছিল ঊর্ধ্বমুখী। ডলারের বিপরীতে পতন ঘটেছে পাকিস্তানি রুপির।

সুশাসন দিতে ইমরানের ব্যর্থতা ছিল দুঃখজনক। পাঞ্জাবের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশ ছিল সেনাবাহিনী। কথিত আছে আইএসআইয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ফাইজ হামিদ পরবর্তী সেনাপ্রধান হতে পাইপলাইনে ছিলেন। ফাইজ মুখ ফসকে বলেও ফেলেছিলেন সেকথা। প্রতিবেশী আফগানিস্তানের কর্মকর্তাদের কাছে আগেই বলেছিলেন, তিনি সেনাবাহিনীর দায়িত্ব পেতে যাচ্ছেন। তার এ উচ্চাকাক্সক্ষা থেকেই বর্তমান সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে ফাইজের অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়েছিল। অক্টোবরে দুজনের বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করেছিল। ইমরানও জড়িয়ে পড়েন এ বিরোধে।

সেনাবাহিনী ও ইমরান সরকারের মধ্যকার সম্পর্কের এ দৃশ্যমান বিরোধকে কাজে লাগিয়েছেন ইমরানবিদ্বেষীরা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের সম্পর্কের টানাপড়েনের কারণে সেই দূরত্বও স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। যদিও ইমরান বারবার বলে এসেছেন সেনাবাহিনীর সঙ্গে তার কোনো দ্বিমত নেই। এমনকি তিনি তার বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবকে মার্কিন ষড়যন্ত্র হিসাবে উল্লেখ করেছেন-যার সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই বলে স্বীকার করেছেন।

জাতীয় পরিষদের সদস্য আমির লিয়াকত হোসেন নিজের বক্তব্য দিয়ে সাজানো এক ভিডিওতে দাবি করেছেন, ইমরান খান একবার তাকে ফোন করে বলেছিলেন যে তিনি (ইমরান খান) পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়াকে অপসারণের পরিকল্পনা করছেন।

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ

সর্বশেষ আপডেট