শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

অমিক্রন শনাক্তের প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়া

 

করোনাভাইরাসের নতুন ধরন অমিক্রন শনাক্তে একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার গবেষকেরা। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২০-৩০ মিনিটের মধ্যেই অমিক্রন ধরন শনাক্ত করা সম্ভব।

বার্তা সংস্থা এএনআইর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হতে আরও কিছুদিন সময় লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, অমিক্রন ধরন শনাক্তে নতুন যে প্রযুক্তি আনা হয়েছে, সেটি আণবিক প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যে ফল পাওয়া যাবে, তা প্রকাশ করা হবে অনলাইনে।

১০ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার পোহাং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পোসটেক) এক ঘোষণায় বলা হয়, রাসায়নিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক লি জুং উকের নেতৃত্বাধীন গবেষণা দল এ আণবিক পরীক্ষা প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন।

অমিক্রন করোনাভাইরাসের এমন একটি ধরন, যার স্পাইক প্রোটিনে ২৬ থেকে ৩২ বার রূপান্তর হয়েছে। কোভিড-১৯ ভাইরাস এই স্পাইক প্রোটিন ব্যবহার করেই মানবকোষকে সংক্রমিত করে থাকে।

বর্তমানে করোনাভাইরাসের ধরন শনাক্ত করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র তিনটি পদ্ধতি ব্যবহার করছে। সেগুলো হলো জিন বিন্যাস, সুনির্দিষ্টভাবে ডিএনএ বিশ্লেষণ ও পিসিআর পরীক্ষা।

বর্তমান পিসিআর টেস্টে ডেলটা ধরন শনাক্ত করা সম্ভব হলেও অমিক্রন শনাক্ত করা কঠিন। অধ্যাপক লি বলেন, অমিক্রন শনাক্তে পিসিআর টেস্টে এন জিনের জন্য শক্তিশালী সংকেত পাওয়া গেলেও এস জিনের জন্য দুর্বল সংকেত পাওয়া যায়। গুপ্ত অবস্থায় থাকা অমিক্রন শনাক্তের ক্ষেত্রে এন ও এস জিন দুটিই পজিটিভ হতে হয়। তা না হলে অন্য ধরন থেকে একে আলাদা করা কঠিন। তবে নতুন উদ্ভাবিত আণবিক প্রযুক্তিতে কার্যকরভাবে অমিক্রন ধরন শনাক্ত করা যায়। তা ছাড়া পিসিআর টেস্টের ভিন্ন ভিন্ন প্রক্রিয়ায়ও এ প্রযুক্তি কাজ করবে।

প্রচলিত প্রযুক্তিগুলোর মধ্য দিয়ে সাধারণত প্রতি ডিভাইসে ৯৬টির মতো নমুনা প্রক্রিয়াকরণ করা যায়। তবে গবেষকেরা আশা করছেন, নতুন প্রযুক্তি দিয়ে প্রতি ৩০ মিনিটে ১২৫টি নমুনা (প্রতি ঘণ্টায় ২৫০টির বেশি নমুনা) প্রক্রিয়াকরণ করা যাবে। পাশাপাশি এ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিশেষায়িত সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। আর এ কারণে সাধারণ কিট ব্যবহার করে খুব সহজে এ পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। চার দিনে এ কিট তৈরি করা যাবে।

অধ্যাপক লি বলেন, ‘আমার আশা, এ প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে আমরা যতটা সম্ভব দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারব। কোভিড-১৯–এর নতুন ধরন দ্রুত শনাক্ত ও তা মোকাবিলার চেষ্টা করব আমরা।’

এ প্রযুক্তির এখনো বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হয়নি। তবে অমিক্রনের পিসিআর টেস্ট পদ্ধতি এখনো আবিষ্কার না হওয়ায় আপাতত এ প্রযুক্তিকে সহায়ক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। অধ্যাপক লির আশা, পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহারের পর আগামী বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এ প্রযুক্তির বাণিজ্যিক ব্যবহার শুরু হতে পারে।

সম্পর্কিত শব্দসমূহঃ

এই শাখা থেকে আরও পড়ুনঃ

সর্বশেষ আপডেট